• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

চট্টগ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন-যান চলাচলে প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

  • ''
  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০২৪

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগব্যবস্থার মাইলফলক হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই। একদিকে যেমন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ অন্যদিকে নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে চোখ ধাঁধানো নান্দনিক এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।
চট্টগ্রামে দীর্ঘতম লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে নামকরণ করা হয়। তবে এ উড়াল সড়কে যানবাহন চালাতে হলে গুনতে হবে টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় , টোল দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি খুলতে চায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এটি চলতি মাসে আংশিকভাবে খোলার কথা ছিল, কিন্তু, এখন দুটি অস্থায়ী টোল প্লাজা নির্মাণের পর, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি আংশিকভাবে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। আগামী মাসের মধ্যে দুটি টোল প্লাজার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিডিএ ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়কে বিভিন্ন হারে টোল আদায়ের প্রস্তাব দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর টোল নির্ধারণের পর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন পয়েন্টের জন্য বিভিন্ন হারে টোল আদায় করা হবে। সব র‍্যাম্প নির্মাণের পর টোল আদায়ের পুরো প্রক্রিয়া শুরু হবে।৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এখন দৃশ্যমান।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান দৈনিক বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা সি-বিচ পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ । এটিতে ওঠানামার জন্য ১৫টি র‍্যাম্প থাকবে। এর মধ্যে ১৩টি র‍্যাম্প নির্মাণাধীন রয়েছে। তবে কবে নাগাদ যান চলাচল শুরু হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।সর্বোচ্চ গতিসীমা রাখা হয়েছে ৬০ কিলোমিটার। এখানে নিরাপত্তার জন্য বসানো হবে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে স্পিড ক্যামেরা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ এই ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করবে। নির্ধারিত গতির চেয়ে যারা কম বা বেশি চালাবে সেসব যানবাহনগুলোকে অটোমেটিক স্পিড ক্যামেরার মাধ্যমে জরিমানার আওতায় আনা হবে।

২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন হওয়ার সময় ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়। এরপর ২০১৮ সালের মাঝে কাজ শুরু হলেও নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় পরের বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কাজের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে ২০২২ সালে নকশা ‘সংশোধন’ করে আরও এক হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়। একইসঙ্গে বাড়ানো হয় প্রকল্পের মেয়াদ। যা এ বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা।

এ ব্যাপারে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন্ শামস্ দৈনিক বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘শিগগিরই যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বর্তমানে এটিতে পোল লাগানো হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আগে বহদ্দারহাট থেকে দুই-তিন ঘণ্টা লাগতো পতেঙ্গায় যেতে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে এখন মাত্র ২০ মিনিটে যাওয়া যাবে। এটি চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।

জানা যায় ,এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি চালু হলে চট্টগ্রাম নগরীর লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। অথচ এখন সড়ক ধরে ভয়াবহ যানজট পেরিয়ে এটুকু পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। ফলে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসপাড়ায় আসতে জনসাধারণকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ ছাড়া ফ্লাইট মিসের ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

ভোগান্তি হ্রাস এবং পুরো মহানগরীকে যানজট থেকে রক্ষায় নির্মাণ করা হয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। প্রয়াত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে এ উড়াল সড়ক গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads